আজ নাগরিক ব্লগে একটা লেখা দেখলাম যার শিরোনাম
“ধর্ষণ সংস্কৃতি, আমাদের সমাজ এবং বিশ্ব”
যেখানে নির্ভয়ার ধর্ষক ও তার আইনজীবি এবং মোহাম্মদপুর প্রিপেটরী স্কুলে প্রথম শ্রেনীর ছাত্রীর যৌননিগ্রহের কথা বলা ছিল। ধর্ষন সংস্কৃতি হতে যাবে কেন? আর কেনই ধর্ষককে দায়ী করে ধর্ষনের পথ খোলা রাখব আর শফির তেতুল মন্তব্য নিয়ে তামাশা করব? আর এ তামশা কতটা যৌক্তিক?
ধর্ষন কেন আজ সংস্কৃতিতে রূপ নিচ্ছে? আর তার জন্য কেনই শুধু ধর্ষকে দোশারপ করে? যে মেয়ে রাস্তায় বেহায়া, খোলামেলা, হট ফিগারে বাহির হয় সে কি একটু ও দায়ী না? আমাদের মিডিয়া, সংস্কৃতি ও আধুনিকতা এবং নারীর চলাফেরা এমন পর্যায়ে এসেছে যে ধর্ষন মানুষের নিত্য চাহিদার মত ব্যপার। আর মিডিয়া ও সুশীলরা এসব পাশ কাটিয়ে শুধুই ধর্ষককে দায়ী করে যায়। তার মাথায় ধর্ষনের মত উদ্রেক সৃষ্টি হওয়ার কারণগুলোর দিকে কারো নজর নেই। নাগরিক ব্লগ ধর্ষনকে সংস্কৃতি দিকে ইঙ্গিত করছে কিন্তু ধর্ষকের অপরাধের উপাদানগুলো নিয়ে কোন সুশীল বা ব্লগের মাথা ব্যথা নাই। তাদের উত্তর এ ভাবেই দিয়েছি যা নিচে লিখে দিলাম।
ধর্ষন একটি মারাত্মক অপরাধ, যা অত্যন্ত অমানবিক, বর্বর। যা ইসলামে কঠোরভাবে নিষেধ ও শাস্তির বিধান রয়েছে। ধর্মে তিনটি মহাপাপের ভিতর একটি ব্যভিচার, আর ধর্ষন তো তার চেয়েও মারাত্মক। এই ধর্ষন রোধ না হলে কাল আমার বোনটিও ধর্ষিত হতে পারে। আমরা টকশো আর মিডিয়ায় শুধু ধর্ষনের বিরুদ্ধে বলে যাই কিন্তু ভবিষ্যতে আরে ধর্ষন বেড়ে যাওয়ার রাস্তাটিকে খোলাই রেখে যাই। শফির তেতুল শব্দ নিয়ে আমরা অনেক তামাশা করেছি, কিন্তু বাস্তবিক অর্থে তা সত্য। আমি সকাল ফজরের নামাজ পড়ে একটু ভোরের হাওয়া খেতে বাহির হওয়ার জন্য বাসার গেট খুললাম। খুলেই দেখি বাসার পাশে এক ইয়ং মহিলা তার বর্ননা যেমন হট ফিগার তেমন খোলামেলা। তাকে দেখেতো আমার যৌবন উত্তেজনা চরমে। সাথে সাথে আমার চোখ ফিরিয়ে নিলাম তা হয়ত ধর্মের ভয়ে এবং সামাজিকতা ও মানুষত্ববোধে। এভাবে কি এই একজনই রাস্তায় আছে? আচ্ছা এরকম ভাবে রাস্তায় চলাফেরা করলে আমার চোখ কি খুলে পকেটে রেখে দিব? আর যৌবন বা কামউত্তেজনা কি আমার তৈরী যে এর জন্য আমাকে দোশ দিবেন। এতো সেই তেতুলের ই কথা। সামনে তেতুল আছে তো জিবে জল আসবেই। তেতুল সামনে না থাকলেই তো আর জিভে জল আসতো না। তাই বলে তো এই প্রেক্ষিতে রাস্তায় পেয়েছি বা যৌনউত্তেজনা এসেছে বলেই ধর্ষন করবো তা হতে পারে না। আমাকে ধর্ম, সমাজের কথা চিন্তা করতে হবে। মানবিকতা এবং অপর মেয়েকে বোনের চোখে দেখতে হবে। আর অপর মেয়েটি তার ভাইয়ের সমানে যে ভাবে অত্যন্ত শালীনভাবে উপস্থিত হয় তেমনি রাস্তায় ও সেভাবে উপস্থিত হবে। এক কথায় অন্য কথা এসে যায়, আজ কাল আধুনিক সমাজে শালীনতা বলে কিছু নেই। শালীনতা মানেই যেন স্বাধীনতা বিরোধী। শালীন ভাবে চলতে গেলেই নারীর স্বাধীনতা খর্ব হয়। তাই আবার আমরা তেমন নিউজ ও দেখতে পাই যে “মামীকে নিয়ে ভাগ্নে উধাও” “চাচীর সাথে ভাতিজার পরকীয়া” ইত্যাদি। এসব তো অশালীনতা আর খোলামেলা চলার ফসল। না হলে ভাগ্নের কিভাবে মা সমতুল্য মামীকে/চাচীকে নিয়ে এমন চিন্তা আসে? আমার বোন রাস্তায় যখন অত্যন্ত শালীন ভাবে চলাফেরা করার পরও যদি কোন বখাটে ইভটিজিং বা তার চেয়ে মারাত্মক বেশি কিছু করে তার জন্য শুধু আমি নই পুরো জাতি তার শাস্থির দাবিতে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করতে হবে। আর আমার বোন অশালীন মারাত্মক বেহায়া হয়ে চলবে আর তার জন্য ধর্ষিত হলে তার দায় আমি বা জাতি নেবে না। কষ্ট লাগতেই পারে। আজ কাল বাচ্ছা মেয়েদের এমন পোশাক পরানো হয় যে একটা যুবতির মাঝে যে রূপ, তা তার ভেতর ফুটে উঠে। তো বাচ্ছারা ধর্ষিত হবে না কেন? তবে আমাদের সমাজে অনেক শত্রুতার জের ও পশুমানবদের হাতে অনেক নিরিহ বাচ্ছা, বোন, মা কে ধর্ষিত হতে হয়। যার বিচার এই রাষ্ট্র সমাজ দিচ্ছে না। কিন্তু বেহায়া একটা মেয়ে ধর্ষিত হলে তার জন্য পুরো মিডিয়া ব্লগ সব জেগে যায়। আর শুধু তেতুল, মধু ইত্যাদি নিয়ে অনেক সাহিত্য টক শো জন্ম নেয়। বেহায়া, অশালীন আর বেপর্দাভাবে চললে ধর্ষন শুধুই বাড়বে না তা সংস্কৃতিতে রূপান্তরিত হবে। আবার ধর্ষকের কঠিন শাস্তি না হলে নির্বিচারে ধর্ষন বেড়েই যাবে।
- আমি সেদিন একটা ভিডিও দেখেছি যেখানে এক ধর্ষক মেয়েটিকে জোরপূর্বক নগ্ন করে অমানবিক ও বর্বর ভাবে পশুর মত ধর্ষন করতেছে। মেয়েটি তার পা ধরে কাঁদতেছে তবে পশুটির কোন ভ্রুক্ষেপই নেই। যা দেখে আমি 2দিন সম্পূর্ন মানষিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছি। আমি যদি ঐ ধর্ষক কে পেতাম তবে আমার ফাঁসি হোক তাও তাকে রেহাই দিতাম না।
আমাদের গুনীজনরা শুধুই মিডিয়ায় টকশো ব্লগ এ লেখে যায় তেতুল নিয়ে অনেক গল্প। অনেকে এসব লিখে সাহিত্যিক হয়ে যায়। শুধু ধর্ষকের বিরুদ্ধে বলে যায় আর ধর্ষনের পথকে খোলা রেখে যায়। একটা মেয়ে অবশ্যই তার চলাফেরায় পোশাকে সচেতন হতে হবে। রাত বারোটায় অযথা রাস্তায় থাকবে আর ধর্ষিত হবে আর তা নিয়ে বড় বড় গল্প লিখব তা হয় না। ধর্ষনকে ঘৃনা করতেহবে। ধর্ষনের পথ ও বন্ধ করতে হবে। পথ খোলা রেখে ধর্ষন রোধ করা যাবে না। আমাদের নারী জাতিকে অনেক শালীন হতে হবে। শালীনতা নারীকে যেমন সম্মানিত করে তেমনি নিরাপদ ও রাখে। আর যারা ধর্ষক তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন ও বাস্তবায়ন করে এবং নারীদের খোলামেলা রাস্তায় চলাফেরা বন্ধ করে সমাজ ও রাষ্ট্র হতে ধর্ষন রোধ করতে হবে। তবেই আর ধর্ষন সংস্কৃতিতে রূপ নেবে না। দুঃখের বিষয়, আমাদের সুশীলরা শুধুই ধর্ষককে দায়ী করে যায়, মিডিয়া ও তা বড়করে প্রচার করে। আমি আমার লেখার প্রথম কথাটি বলতে চাই, মহিলাটি শালীন ভাবে থাকলে আর আমার ভিতর যৌবনউত্তেজনা আসত না। তাই নারীদের ও বেশ শালীন হতে হবে এবং আমাদের পুরুষ সমাজ ও যথেষ্ট সচেতন হতে হবে, নারীকে সম্মান দিতেহবে। । রাষ্ট্র ও ধর্ষকদের কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
লেখকঃ মাইনউদ্দিন পাটওয়ারী
লেখকঃ মাইনউদ্দিন পাটওয়ারী