No title

  গোল্ডেন গেট ব্রিজ স্বপ্নপুরী আর মৃত্যুপুরী দুটোই।

বিখ্যাত ডিজাইনার, কবি এবং প্রকৌশলী জোসেফ স্ট্রস এর ডিজাইন করা সান ফ্রান্সিসকোর বিখ্যাত গোল্ডেন গেট ব্রিজ ১৯৩৭ সাল থেকে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এর পর থেকে প্রায় ১৬০০ মানুষ বিভিন্ন কারনে এখান থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করে। শুধু গত বছরই ব্রিজটি থেকে ৪৮ জন মানুষ ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। মানুষের কাছে তাই গোল্ডেন গেট ব্রিজ স্বপ্নপুরী আর মৃত্যুপুরী দুটোই। অনেক বছর আগে হতাশাগ্রস্ত একজন লোক তার এপার্টমেন্টে রেখে যাওয়া সুইসাইড নোটে লিখেছিলেন-
"গোল্ডেন গেট ব্রিজে আত্নহত্যা করতে যাওয়ার সময় যদি অন্তত একজন অচেনা মানুষও তার দিকে তাকিয়ে হাসে তাহলে আত্নহত্যা করবেন না।"
রুঢ় সত্য হলো সে মানুষটি আর বেঁচে থাকেন নি। সেই বিশেষ দিনে শত শত মানুষের মাঝে একজন মানুষও তার দিকে তাকিয়ে ভুল ক্রমেও হাসে নি।
পৃথিবীর সব মানুষই মনে হয় চরম হতাশা, তীব্র দুঃখ, ভয়ঙ্কর বেদনা, এবং পরাজয়ের গ্লানিতে একবার হলেও মৃত্যুকে ভাবে। তখন জীবনে চেয়েও মৃত্যুকে বেশি আপন মনে হয়। আমারও অনেক সময় অনেক বার এমন মনে হয়েছে, "কী হবে বেঁচে থাকে। কিংবা বেঁচে থাকাটা ক্লান্তিকর, কষ্টকর" তারপর নিজের অন্তর আত্নার অনুভব নিয়ে আবার উঠে দাঁড়াতে চেষ্টা করেছি।
জীবনে অনেক কিছু হারিয়েছি, কেঁদেছি, আফসোস করেছি, তারপরও মনকে প্রবোধ দেই সবকিছুর পরেও তো ভালো আছি। প্রতিদিন নতুন করে সূর্য দেখছি। আশেপাশের চেনা মুখ, প্রিয় মুখগুলো দেখছি। সেই আত্নহত্যা করা হতভাগ্য মানুষটার মত এক টুকরো হাসির তো অন্তত অভাব নেই আমার। তাই না?
মানুষ কেন হারিয়ে যাবে? কেন আত্নহত্যা করে মরে যাবে? মৃত্যু বা বেঁচে থাকার বিষয়টি কি এতই সহজ? এতই খেলো? জীবন তো এক অসাধারণ উপহার!
গল্প, উপন্যাসে বা সিনেমায় কত কিছুই না সম্ভব হয়। বাস্তবে যদি সম্ভব হতো আমি সত্যি সেই মানুষটাকে খুঁজে আবার এই পৃথিবীতে নিয়ে আসতাম, সেই হতভাগ্য মানুষটাকে একটা হাসি উপহার দিয়ে বেঁচে থাকার আকুলতা বোঝাতাম।
মরে গেলে তো মরেই গেলাম। তখন আর কোন কিছু অবশিষ্ট নেই। নতুন করে পদে পদে, মুহুর্তে মুহুর্তে নতুন করে বেঁচে থাকার নামই হয়তো জীবন।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post