তাহলে কি ইব্রাহিম আঃ হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান জাতির পিতা?



জাতির পিতা তর্ক ও তার অবসানঃ-
মোঃ মাইনউদ্দিন।
আজ আমার অফিসে এক ভদ্রলোক আসলেন, কথার পরিচয়ে জানতে পারলাম উনি আমার পাশ্ববর্তী গ্রামের। ভালই হল কর্মজীবনে একজন গ্রামের লোককে কাছে পাওয়ায় নিজের ভিতর সাহস আরো মজবুত হলো। আজ 15ই আগষ্ট। জাতীয় শোক দিবস। উনার সাথে কথা বলতেছি আর পত্রিকা দেখতেছি। পত্রিকার পাতা জুড়েই শেখ মুজিবকে নিয়ে নানা কলাম। নিজে নিজে বলতেছি যে আজ পত্রিকা জুড়ে শেখ মুজিব। উনি শুনে বলল হু, 15 আগষ্ট তো তাই। এ কথা বলে পত্রিকার পাতার দিকে তাকাল। পত্রিকার উপরে একটি কলাম “জাতির পিতার আজ মৃত্যু বার্ষিকি”। কলামটা দেখে একটা বিশ্রি ভাষা উচ্চারণ করে বলতেছে ‘শালারা ওরে জাতির পিতা বলে’ জাতির পিতা কাকে বলে ওরা জানে? ও কি সারা বাংলাদেশে সকলের পিতা?
ইতি পূর্বে আলাপ চারিতায় জানতে পারলাম উনি মাদরাসায় ফাজেল পাশ। মোটামুটি শিক্ষিত ও বটে। কিন্তু তার মুখ থেকে এত বড় মূর্খ কথা শুনে আমার রাগ বেড়ে গেল। ভদ্রতার খাতিরে তর্ক করলাম না, কিন্তু মনের মাঝে তার প্রতি একটা রাগ রেখে দিলাম। যার প্রকাশ ঘটবে পরবর্তী দেখার প্রতিটা মহুর্তে।
শেখ ‍মুজিবকে জাতীর পিতা বললে এদের এত গাঁ জ্বলে কেন? দোকানের আড্ডায়, বাসে অনেক সময় বলতে শুনি জাতির পিতা ইব্রাহিম আঃ, আওয়ামিলীগরা মুজিবকে ইব্রাহিম আঃ সাথে তুলনা করতে চায়। তাদের এসব কথায় মনে মনে অনেক হাসি আসে। দেশে পাশের হার বাড়তেছে কিন্তু মূর্খের হার কমেনি। বাঙ্গালি মূর্খ, মূর্খ ই থেকে গেল। এদেশের মৌলবাদীরা পড়া-লেখা করে জ্ঞান অর্জন করেনি, তারাও সেই মূর্খতার ভিতর। না হলে তাদের ও বলতে শুনি জাতির পিতা ইব্রাহিম, শেখ মুজিব না।
আসলে জাতির পিতা কে? জাতির পিতা কি? কেন এত বিতর্ক?
জাতির পিতা শব্দকে আমরা ভূল ব্যাখ্যা দেই। বাবা শব্দের সামর্থক শব্দ পিতা। পিতা শব্দ দ্বারা বাবাকে বুঝায়, আবার পিতা শব্দ দ্বারা অভিভাবক বুঝায়। তবে আমরা শুধু পিতা অর্থে বাবাকেই বুঝি। একটা জাতির পিতা মানে এই না যে সবার বাবা, জাতির পিতা অর্থে এ অর্থ বুঝানো হয়েছ যে একটা জাতির অভিভাবক বা প্রতিষ্ঠাতা। শুধু শুধু না বুঝে হাজার বিতর্ক তুলি। জাতির পিতা অর্থে অনেক সময় ইব্রাহিম আঃ কে বলি। আসলে শেখ ‍মুজিবকে বলা হয় বাঙ্গালী জাতির পিতা। যারা এ নিয়ে বিতর্কতোলে তাদের কাছে প্রশ্ন বাজ্ঞালী জাতিতে তো অনেক হিন্দু , বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান আছে তাহলে কি ইব্রাহিম আঃ হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান জাতির পিতা? ইব্রাহিম আঃ কে বলা হয় মুসলিম জাতির পিতা, আদম আঃ কে বলা হয় মানব জাতির পিতা। এসব আমরা প্রাইমারীতে পড়েছি। বাঙ্গালীদের কে সারা বিশ্বের মাঝে একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র ও জাতী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করায় শেখ মুজিব কে বলা হয় বাঙ্গালী জাতির পিতা। আর মূর্খরা এ কথা শুনলেই ইব্রাহিম আঃ অথবা পিতা অর্থে বাবা শব্দ টানে। তাদের বলি আমরা কি কখনো এ কথা বলি যে ইব্রাহিম আঃ মুসলিম জাতির বাবা? আমরা এক্ষেত্রে এ কথা বলি যে ইব্রাহিম আঃ মুসলিম জাতির পিতা। আমরা শুধু না বুঝে তর্ক করে যাই আর কিছু শিক্ষিত সমাজ বুঝে ও ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে যায়।  
জাতির পিতা নিয়ে বিতর্ক টা আসলে রাজনৈতিক। কারণ যারা শেখ মুজিবকে সহ্য পারেনি তারাই এসব বিতর্ক তোলে।  সাধারণ মানুষের ধর্মীয় দূর্বলতার সুযোগে তাদের কাছে ইব্রাহিম আঃ এর কথা টেনে আনে।  সাধারণ আমজনতা, যখন যা শুনে তাই বুঝে। যারা এদেশে শান্তি শৃখ্ঙলা চায়না তারা ই এসব তর্কতোলে। আর অাম জনতা না বুঝে ঐ মূর্খই থেকে যায় কিন্তু বুঝতে চায় না।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post