আজ ফেসবুকে কিছু পোষ্ট দেখলাম যা দেখে মনটা কেমন যেন হয়ে গেল। পোষ্টগুলো এমন যে, “বিশ্বের মুসলিমরা এক হয়েছে, ইরান-সিরিয়ার বুকে কম্পন সৃষ্টি হয়েছে” আবার “মুসলিম নেতা সালমান তোমায় ডাকছে, 20টি মুসলিম দেশ এক হয়েছ, তিন লক্ষ্ মুসলিম হত্যার প্রতিশোধ নিতে”। খারাপ লাগলো অনেক মুসলিম ভাইরা এটা লাইক ও শেয়ারের মাধ্যমে প্রচার করছে।
মুসলমানরা এক হয়েছে কার বিরুদ্ধে? আমেরিকা না ইযরায়েলের বিরুদ্ধে? যদি তাই হয় তবে অনেক খুশির খবর। কিন্তু তা নাকি সিরিয়া ইরানের বিরুদ্ধে?
ইরান-সিরিয়া কি অমুসলিম?
না।
তবে?
তারা শিয়া।
তারা শিয়া হলেও এখন দেখি সুন্নিদের চেয়েও তারা বেশি ইসলামের পথে আছে। তারা আমেরিকার বা ইযরায়েলের পা চাটে না। ইরান সব সময় আমেরিকার বিরুদ্ধে ও ফিলিস্তিনির পাশে ছিল, আছে। নিউজটা যদি এমন হতো যে মুসলমানর রাষ্ট্রগুলো এক হয়েছে ফিলিস্তিনের পাশে দাড়াতে তবে তা হতো অনেক সুখবর। কিন্তু এখন দেখি তা আবার অপর মুসলমান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে।
“মুসলমান পরস্পর ভাই ভাই” তবে এক মুসলমান অপর মুসলমানের বিরুদ্ধে কিভাবে দাড়ায়? দাড়াতে হলে তাদের বিরুদ্ধে দাড়াতে হবে যারা মুসলমানদের নিয়ে পুতুল খেলছে সেই ইহুদি-আমেরিকার বিরুদ্ধে। কিন্তু তা না হয়ে হলো উল্টা। কেন?
মুসলমানদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের জোট। তাও আবার প্রধান মুসলিম শক্তিশালী রাষ্ট্র ইরান ও পশ্চিমা কট্টর বিরোধী ও আপোসহীন আসাদের বিরুদ্ধে। অথচ যারা এই মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তি সৃষ্টি করছে। যারা মুসলিমদের বিশ্বে সন্ত্রাসি, জঙ্গিবাদ হিসেবে পরিচয় করাচ্ছে, সারা বিশ্বে মুসলিম নিধন করছে তার বিরুদ্ধে কোন জোট তৈরী হয় না।
ইরান-সিরিয়া কি অমুসলিম?
না।
তবে?
তারা শিয়া।
তারা শিয়া হলেও এখন দেখি সুন্নিদের চেয়েও তারা বেশি ইসলামের পথে আছে। তারা আমেরিকার বা ইযরায়েলের পা চাটে না। ইরান সব সময় আমেরিকার বিরুদ্ধে ও ফিলিস্তিনির পাশে ছিল, আছে। নিউজটা যদি এমন হতো যে মুসলমানর রাষ্ট্রগুলো এক হয়েছে ফিলিস্তিনের পাশে দাড়াতে তবে তা হতো অনেক সুখবর। কিন্তু এখন দেখি তা আবার অপর মুসলমান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে।
“মুসলমান পরস্পর ভাই ভাই” তবে এক মুসলমান অপর মুসলমানের বিরুদ্ধে কিভাবে দাড়ায়? দাড়াতে হলে তাদের বিরুদ্ধে দাড়াতে হবে যারা মুসলমানদের নিয়ে পুতুল খেলছে সেই ইহুদি-আমেরিকার বিরুদ্ধে। কিন্তু তা না হয়ে হলো উল্টা। কেন?
মুসলমানদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের জোট। তাও আবার প্রধান মুসলিম শক্তিশালী রাষ্ট্র ইরান ও পশ্চিমা কট্টর বিরোধী ও আপোসহীন আসাদের বিরুদ্ধে। অথচ যারা এই মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তি সৃষ্টি করছে। যারা মুসলিমদের বিশ্বে সন্ত্রাসি, জঙ্গিবাদ হিসেবে পরিচয় করাচ্ছে, সারা বিশ্বে মুসলিম নিধন করছে তার বিরুদ্ধে কোন জোট তৈরী হয় না।
ফিলিস্তিনে নিরিহভাবে শিশুদের হত্যা করছে ইহুদিরা। প্রথম কাবা বায়তুল মোকাদ্দাস দখল নিয়ে লড়াই হচ্ছে তার জন্য কোন মুসলিম জোট তৈরী হয় না।অথচ মুসলামনদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের জোট তা আবার গর্বের সাথে প্রচার করছি। কত নিচে নেমেগেছে আমাদের মানসিকতা, আমাদের কর্মকান্ড! ভাবতেও খারাপ লাগে যেখানে মুসলমানদের বিরুদ্ধে পুরো পশ্চিমা শক্তি সেখানে আমরা মুসলমানরাই মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়ছি।
- সিরিয়ার আজকের পরিস্থিতির জন্য কি আসাদ দায়ী? না, যারা বিরোধীদের উস্কানি ও সামরিক শক্তি দিয়ে সাহায্য করে অরাজকতা ও প্রাণহানি তৈরী করে ছিল তারা দায়ী? জোট হলে আসাদের বিরুদ্ধে কেন, জোট হবে আমেরিকার বিরুদ্ধে। আমেরিকা যদি বিরোধীদের উস্কে না দিত তবেতো আর এত অরাজকতা তৈরী হতো না। আর যদি বিরোধীদের সামরিক সাহায্য না করত তবে এত প্রাণহানি ঘটত না।আমরা কেন আমেরিকার দোশকে বড়করে না দেখে আসাদকে দোশারপ করি? আজ আমেরিকার কৌশলের শিকার মুসলমানদের ভিখারি হয়ে অভিবাসী হয়ে অন্য রাষ্ট্রে আশ্রয়ের ভিক্ষা চাইতে হচ্ছে। আর আমরা সেই আমেরিকার পক্ষনিয়ে নিজ মুসলিম ভাইয়ের বিরুদ্ধে সামরিক লড়াইয়ের ইঙ্গিত নিয়ে জোট তৈরী করছি। কতই না লজ্জার ব্যপার। আজ আমেরিকা ও ইসরায়েলের মুসলিম বিশেষ রাষ্ট্র সিরিয়ার বিরোধীদের মদদ দিয়ে তাদের শান্ত পরিবেশে অশান্তি তৈরীর মাধ্যমে জল ঘোলা করে মাছ শিকার করছে। আর আমরা তাদের ইচ্ছাকে সফলতায় পৌছেদিতে জোট তৈরী করছি। কি অদ্ভুত ব্যপার।
- আসাদ কেন ক্ষমতা ছেড়ে দিচ্ছে না? আসাদ তো ক্ষমতা ছাড়লেই সব শান্ত! আসাদ যদি ক্ষমতা ছাড়ে তবে তা হবে আমেরিকা তথা অন্যায়ের কাছে মাথা নত করা। ইসলাম কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না। আসাদ সরে গেলে সিরিয়া হবে আমেরিকার উপনিবেশ। যেখানে রাসুল সাঃ বৈশিষ্ট ছেড়ে শুরু হবে পশ্চিমা সংস্কৃতি। যেখানে থাকবে না নারিদের বোরকা পরিহিত পরিবেশ।যেখানে তৈরী হবে না ইসলামী শক্তি। আর তাই আমেরিকা চায় আসাদ সরে যাক। সিরিয়া আর ইরান তাদের করতলগত হলেই পৃথিবীতে মুসলিম শক্তি বলে আর কিছু থাকবে না।
- মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তি ও মুসলামান রাষ্ট্রে সামরিক হামলা, যা বিশ্বে ইসলামী শক্তিকে নির্মূল করার চরম কৌশল। আমেরিকা একেক অজুহাত ও কৌশল অবলম্বন করে ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া, মিসর, তিউনিশিয়ায় তাদের করতলগত করতে সক্ষম হয়েছে। সৌদি আরবতো তাদেরই...। বাকি আছে শক্তিধর সিরিয়া ও ইরান। তার মাঝে সিরিয়ায় বিরোধীদের উস্কে ও সামরিক সাহায্য দিয়ে তছনছ করে দিচ্ছে। বহু নবীর পদচারনার পবিত্র ভূমি সিরিয়া আজ রক্তে রঞ্জিত। এত খারাপ লাগে যে আমাদের সিরিয়াবাসী পশ্চিমাদের কাছে ভিখারী হয়ে অভিবাসী আশ্রয়ের ভিক্ষা চাইছে। কেন আজ তারা ভিখারি হল? কেন তাদের সুন্দর রাষ্ট্রে বিরোধীদের দিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করল? শান্ত পরিবেশকে কেন অশান্ত করল? আসাদ সরে গেলে হয়ত এমন হতো না তবে আসাদ সরে গেলে তা হয়ে যেত আমেরিকার উপনিবেশ। দোশ তো আসাদের না। দোশ তো তার যে সুন্দর রাষ্ট্রে বিরোধীদের দিয়ে অশান্তি তৈরী করল। আর আমরা অন্য মুসলিম রাষ্ট্র আসাদের পাশে না দাড়িয়ে আমেরিকার কৌশলকেই সমর্থন করে গেলাম। শেষ পর্যন্ত আমেরিকাকে খুশি করতে আমরা নিজেরাই জোট গঠন করলাম। যে তা দেখে আমেরিকা বাহবা দেয়। আমরা যদি মুসলিম শক্তি রক্ষার পক্ষে থাকতাম তবে কেন ইরাকের সময় জোট তৈরী করলাম না, কেন আফগানিস্তানের সময় জোট তৈরী করলাম না, কুরবানীর পূর্ব রাতে সাদ্দামকে ফাঁসি দিয়ে মুসলিম শক্তিকে যে চরম অপমান অপদস্ত করা হয়ে ছিল তার প্রতিশোধে কেন জোট গঠন করলাম না। আরব মা বোনদের সম্ভ্রম রক্ষায় কেন জোট গঠন করলাম না? আজ ফিলিস্তিনে নির্বিচারে শিশুহত্যা হচ্ছে, রোহিঙ্গা মুসলিম পুড়িয়ে হত্যা হচ্ছে, দক্ষিন আফ্রিকা ও ভারত সহ সারা বিশ্বে নির্যাতিত মুসলিমদের সহায়তায় কোন জোট না গঠন করে অথচ আজ সিরিয়া আমেরিকার শক্তিকে জয় করার জন্য আমেরিকাকে খুশি করার জন্য জোট তৈরী হচ্ছে। আমরা কেমন মুসলমান? আজ যদি আমেরিকাসহ পশ্চিমারা সিরিয়া সহ মধ্যপ্রাচ্য ইসুতে নাকগলানো্ বন্ধ করে তবেই বাস্তবে সিরিয়ায় শান্তি নেমে আসবে। সিরিয়ায় আসাদের পরাজয় মানেই একটি ইসলামী রাষ্ট্র আমেরিকার করতলগত হওয়া। আর আমরা মুসলিম হিসেবে তার পরাজয়ের কামনা না করে সংঘাত ছাড়া শান্তি পূর্ন উপায়ে তার সমাধান চাওয়াই কাম্য। অথচ মধ্যপ্রাচ্য আমেরিকার আধিপত্য দূর করার জন্য আমরা জোট না বেধে নিজেরা নিজেদের বিরুদ্ধে জোট বাধছি। আমরা আসলে নিজেদের পরিচয় ও ঐতিহ্য এবং ইসলামী শক্তি হারানোর রাস্তাকে প্রশস্ত করেদিচ্ছি।
- 20 টি রাষ্ট্রের গঠিত জোট সম্পূর্ন আমেরিকার মিত্র হিসেবে তৈরী ছাড়া আর কিছুই না। এ জোট তৈরী ও তার অভিযানের লক্ষ্য ‘সিরিয়া ও ইরানে হামলা’ হলে সত্যি পৃথিবী থেকে ইসলামী রাষ্ট্র বলে কিছুই থাকবে না। এ জোট যদি ইসলামী শক্তির জোট হতো তবে তার প্রধান লক্ষ্য হতো ফিলিস্তিনকে ইহুদিদের হাত থেকে রক্ষা করা। রোহিজ্ঞা ও আফ্রিকার মুসলিমদের পাশে দাড়ানো। যদি এ শক্তির লক্ষ্য শান্তি স্থাপনের লক্ষ্য হতো তবে তাদের প্রধান লক্ষ্য থাকতো মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় পশ্চিমাদের বিতাড়িত করে বিরোধী পক্ষ ও সরকার পক্ষের মধ্যে যুক্তিযুক্ত আলোচনা করে শান্তি স্থাপন করা। অথচ আজ দেখি যে জোট তৈরী হয়েছে তা সম্পূর্ন আমেরিকাকে খুশি করা ছাড়া অার কিছুই না। যার নেতৃত্বে সৌদি শক্তি যা আমেরিকার গোলাম।এ শক্তি অচিরেই পৃথিবী হতে মুসলিম ঐতিহ্য ও বৈশিষ্ট্য এবং মুসলমানদের অস্তিত্বকে বিলীন করে দিবে।এশক্তির প্রতি খুশি না হয়ে তা ফেসবুকে সহ ছড়া-ছড়ি না করে তার প্রতি নিন্দা করা উচিত। আমেরিকা আজ মুসলিমদের এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে আজ মুসলমানরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়বে। অথচ মুসলমানদের প্রধান প্রতিপাদ্য “এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই” ।
- অনেককেই দেখি বলে “মুসলিম নেতা সালমান ডাকছে, 20টি রাষ্ট্র এক হয়েছে”। যেই সালমান সিরিয়ার মুসলিমদের মাঝে শান্তি বাস্তবায়নের জন্য প্রকৃত পদক্ষেপ না নিয়ে সিরিয়ার-ইরানের বিরুদ্ধে জোট গঠনের আহ্বান করে পরিস্থিতিকে আরো উগ্র এবং আমেরিকার পরিকল্পনাকে আরো সহজ করে দিচ্ছে, সে কিভাবে মুসলমানদের নেতা হয়? যেই সৌদি আরব আমেরিকাকে খুশি করার জন্য ইয়ামেনে হামলা করল, যেই সৌদি সবসময় মুসলমান বিরোধী আমেরিকার পরিকল্পনাকে সমর্থন করে যায় তারা কিভা্ব মুসলমানদের নেতা হয়? মুসলমানদের নেতা হলে হবে “আহমেদে নিজাদ”। যিনি জাতিসংঘে সকল রাষ্ট্র প্রধানকে মুহাম্মদ সাঃ এর জীবন চরিত্র অনুসরনের আহবান করেছেন। নেতা হলে তিনি হবেন। পক্ষ অবলম্বন করলে করতে হবে ইরানের যারা বিধর্মী শক্তির সাথে আপোস করে না। বর্তমান সৌদি শক্তি ইসলামের বাস্তিবিক বিরোধী ও আমেরিকা ইহুদি পক্ষের শক্তি। জোট হলে হতে হবে ফিলিস্তিন, রোহিঙ্গা মুসলিম, আফ্রিকার মুসলিম ও বায়তুল মোকাদ্দাস রক্ষার জন্য । জোট হতে হবে সিরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আমেরিকার প্রভাব দূর কারার জন্য। মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুসলিমদের জোট কখনই সমর্থন বা প্রচার করা কখনই ঠিক হবেনা। বর্তমানে আমরা শিয়া-সুন্নির পার্থক্য না কর সকল মুসলিম এক হয়ে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখে পৃথিবীতে একক শক্তি হিসেবেই দাড়ানোর মূল লক্ষ্য হওয়ায় কাম্য।