‘ একজন মেয়ে জিন্স পড়ে আসার স্বাধীনতা থাকলে কেন হিজাব করে অথবা ধর্মীয় পোষাকে একজন শিক্ষার্থীর আসার স্বাধীনতা থাকবেনা’ প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের
সময়ের কণ্ঠস্বর : ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি অফ বিজনেস এগ্রিকালচার এন্ড টেকনোলোজি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইইউবিএটি (IUBAT) বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক পোশাক নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে শিক্ষার্থীরা। আর যারাই ইসলামি পোশাক পরিধান করে বিশ্ববিদ্যালয় আঙ্গিনায় আসে তাদেরই নানা প্রকার লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড: এম আলিমুল্লাহ মিয়ানের এই আদেশের বিপরীতে মঙ্গলবার নানা কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা। পায়জামা, পাঞ্জাবি, টুপি ও বোরকা পড়ে আসলে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে মানববন্ধন পালন করে।
আজ বুধবার নানান কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। আর এই আদেশের প্রতিবাদ জানিয়েছে বেসরকারি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সবাই একসাথে আন্দোলন করার একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
ফেসবুকের এক পেজে বলা হয়, ‘২ সপ্তাহ আগে, একজন সিনিয়র ভাইয়া যিনি #IUBAT এ ভর্তির পর থেকেই পাঞ্জাবি আর টুপি পড়ে আসতেন। একজন মুসলিম হিসেবে যতোটুকু সম্ভব সুন্নত মেনে চলেন তিনি (আমার দেখা মতে)। তাকে একদিন আমাদের রিসিপসনিষ্ট ধরলেন, ব্যাপক অপমান করলেন তারপর সবার সামনে পাঞ্জাবি ইন করিয়ে গলায় টাই বাধতে বাধ্য করলেন। ভাইয়া-টা ক্যাফেটেরিয়ায় গিয়ে নির্বাক চোখে কাদছিলো। আমি তখন দেখছিলাম।’
IUBAT বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক পোশাক নিষিদ্ধের ষড়যন্ত্র!
IUBAT কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি ধর্মীয়-পোশাক অর্থাৎ, পাঞ্জাবী এবং নিকাব পরিহিতাদেরকে ক্লাস তো দূরের কথা, ক্যাম্পাসে ঢুকতেই দিচ্ছে না।এর প্রতিবাদে গত ২৭ শে অক্টোবর ভার্সিটি অভিমুখে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন।
আমাদের মৌলিক অধিকার এর মাঝে পোষাক ২য় অবস্থানে আছে। একটা জাতির পোষাক তাদের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য ধারন করে।তেমনি পোষাক ধর্মীয় পরিচয়-ও বহন করে।
একটা বিশ্ববিদ্যালয় উন্মুক্ত জ্ঞান আহরনের যায়গা। এখানে সবাই আসে জ্ঞান আহরন করতে, তাই বলে কি নিজের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় রীতিনীতির বাইরে গিয়ে?
IUBAT কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি ধর্মীয়-পোশাক অর্থাৎ, পাঞ্জাবী এবং নিকাব পরিহিতাদেরকে ক্লাস তো দূরের কথা, ক্যাম্পাসে ঢুকতেই দিচ্ছে না।এর প্রতিবাদে গত ২৭ শে অক্টোবর ভার্সিটি অভিমুখে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন।
আমাদের মৌলিক অধিকার এর মাঝে পোষাক ২য় অবস্থানে আছে। একটা জাতির পোষাক তাদের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য ধারন করে।তেমনি পোষাক ধর্মীয় পরিচয়-ও বহন করে।
একটা বিশ্ববিদ্যালয় উন্মুক্ত জ্ঞান আহরনের যায়গা। এখানে সবাই আসে জ্ঞান আহরন করতে, তাই বলে কি নিজের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় রীতিনীতির বাইরে গিয়ে?
আফসোস বড় বড় ডিগ্রীলাভ করেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনাকারীরা, নিজেরাই উন্মুক্ত করে দিয়েছেন এবং বাধ্য করছেন পাশ্চাত্য সংস্কৃতি-কে নিজের করে নিতে।
একটা সময় ছিলো যখন আমরা বৃটিশদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছি। তাদের গোলামি করেছি, এখনো আমাদের পোষাকের মাঝে সেই গোলামী পোষাক(স্যুট & টাই) পড়া থেকে এখনো বেড়িয়ে আসতে পারিনি। আমাদের নিজেদের পোষাক নিয়ে আমরা গর্ব করতে শিখিনি।
টুপি, জুব্বা, হিজাব পড়ে ইউনিভার্সিটিতে ঢুকতে দেয় নি (IUBAT) কর্তৃপক্ষ। তাদের একমাত্র অপরাধ রাসূলের সুন্নতের অনুসরণ করা, আল্লাহর আদেশ অমান্য না করা। জীঁ, আমি ফ্রান্সের কথা বলছিনা। ৯০% মুসলিম বাংলাদেশের কথা বলছি।
(IUBAT)-এর ফাউন্ডার আলিমুল্লাহ মিয়ান নামটা কি ইহুদী-খৃষ্টানের মনে হচ্ছে? না ভাই, উনি ইহুদী-খৃষ্টান কেউ নন। তাহলে উনার ধর্মীয় পোশাকে সমস্যা কি? এমনও তো নয় যে, ইউনিভার্সিটিতে ড্রেস কোড আছে। একজন মেয়ের জিন্স পড়ে আসার স্বাধীনতা থাকলে কেন হিজাব করে আসার স্বাধীনতা থাকবে না? একজন ছেলের টি-শার্ট পড়ে আসার অধিকার থাকলে কেন জুব্বা পড়ে আসার অধিকার থাকবে না?
সাজেদুল হাসান আবির ফেসবুকে লিখেন, ‘আমি কিছুদিন আগে ক্যাম্পাসে ঢুকছিলাম আমার সামনে ছিল এক আপু তিনি বোরকা নেকাপ পরা ছিলেন। গেটের দারোয়ান তাকে প্রথমে ঢুকতে দিতে চায় নি পরে তাকে নেকাপ খুলতে বাধ্য করে।’
জিসান লিখেন, ‘যতটুক দেখলাম, নিউ ইয়র্কেও পাঞ্জাবি-হিজাব পড়া মানুষদের সাধারণ মানুষেরা অন্য রকম ভাবে সম্মান দেয় যেটা সবাইকে দেয় না। সেখানে বাংলাদেশের মত মুসলিম প্রধান দেশে এটা অযৌক্তিক।’
২১ মার্চ ২০১২ রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে মাহাবুবুর রহমান ভূইয়া সাক্ষরিত একটি চিঠিতে আইইউবিএটি IUBAT এর ভিসি বরাবর জানানো হয় যে শিক্ষার্থীদের যেনো ধর্মীয় পোশাক পরিধানে বাঁধা দেয়া না হয়।
প্রসঙ্গত, এর আগে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার ইশফাক এলাহী ব্র্যাকে নেকাব নিষিদ্ধ করলে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে নেকাব নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত তুলে নেন এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদত্যাগ করেন।